দিনে বিএনপি, রাতে আওয়ামী লীগ’- সমাবেশে বিএনপি নেতা সুইট

দিনে বিএনপি, রাতে আওয়ামী লীগ’- সমাবেশে বিএনপি নে
রাজশাহীতে ‘আওয়ামী লীগারদের সমন্বয়ে’ বিএনপির কমিটি গঠনের অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (৩ মে) বিকেলে নগরীর বাটার মোড়ে বিক্ষোভ-সমাবেশে এ অভিযোগ তোলা হয়। এ সময় কমিটি বাতিলের দাবি জানান ছাত্রদল, যুবদল ও বিএনপির সাবেক ও বর্তমান কয়েকজন নেতা।
‘বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠন রাজশাহী’র ব্যানারে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। ব্যানার বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি ছিল। এছাড়া ব্যানারে ‘দখলদার, চাঁদাবাজ, চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও ভূতপূর্ব আওয়ামী লীগারদের সমন্বয়ে গঠিত মহানগর, থানা, ওয়ার্ড কমিটি বাতিল, নিয়ম বহির্ভূত শোকজ ও বহিষ্কার এবং মহানগর যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক রুহুল আমিন বাবলুর বাড়িতে অগ্নিসংযোগ-ভাঙচুর করা আসামিদের দল থেকে বহিষ্কার ও গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করার কথা উল্লেখ ছিল।
এতে সভাপতিত্ব করেন বোয়ালিয়া থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি সাইদুর রহমান পিন্টু। বক্তব্য রাখেন রাজশাহী মহানগর ছাত্রদল ও যুবদলের সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ সুইট, রাজপাড়া থানা বিএনপির সভাপতি শওকত আলী, মতিহার থানা বিএনপির সভাপতি আনসার আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক সাজদার আলী, বোয়ালিয়া থানার সাবেক সাধারণ সম্পাদক রবিউল আলম মিলু, শাহ মখদুম থানা বিএনপির সভাপতি মো. মাসুদ, সাধারণ সম্পাক আব্দুল মতিন, মহানগর যুবদলের সাবেক আহবায়ক আব্দুল কাদের বকুল, প্রমুখ। এতে ছাত্রদলের সিনিয়র সহ সভাপতি মুর্তুজা ফামিম, ইকবাল হোসেন দিলদাল, নাজির, টিয়া, বাধন, আনারুল, শাহানসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।
সমাবেশে আবুল কালাম আজাদ সুইট বলেন, আজকের প্রতিবাদ কেন? আমরা লক্ষ্য করলে দেখতে পাই, এই মহানগরীতে নেতৃত্ব দিয়েছেন এডভোকেট ইমরান আলী সরকার, এডভোকেট কবির হোসেন, আজিজুর রহমান, রাজশাহী মহানগরীর সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা মিজানুর রহমান মিনু, মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল ভাই, শক্তিশালী সাংগঠনিক ব্যক্তিত্ব শফিকুল হক মিলন ভাই। আর এখন যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন, আমি স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, অতীতের নেতৃবৃন্দের একশো ভাগের এক ভাগও নাই। এটাই বাস্তব। যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তারা কেউ চাঁদাবাজ, কেউ লুটেরা, কেউ দখলবাজ, আর কেউ ধান্দাবাজ। তারা রাজপাড়া থানায় একটি আহবায়ক কমিটি দিয়েছেন, আমি তার কাজকে ছোট করে দেখছি না, উনি একজন স্যানিটারি মিস্ত্রী, আর আওয়ামী লীগের দোসর, আওয়ামী লীগ করতেন। তার নাম হচ্ছে মিজান। সদস্য সচিব আওয়ামী লীগার আমিনুল ইসলাম। এই আওয়ামী লীগদেরকে নিয়ে থানা কমিটি গঠন করেছেন।
তিনি বলেন, থানা কমিটি পছন্দ হয় নাই। সাবেক ছাত্রনেতা, বর্তমান যুবনেতা রুহুল আমিন বাবলু ভাই, যারা বিএনপি করি এতদিন আন্দোলন সংগ্রাম করেছি, রক্ত দিয়েছি জেল খেটেছি তারা কখনো আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মেনে নিতে পারি না, কোনোদিনও মেনে নেব না। রুহুল আমিন বাবলু ভাই প্রতিবাদ করেছিল, ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিল। যাদের লাগার লেগে গিয়েছিল, তাদের তলে আগুন লেগে গেছে। নেশাগ্রস্থ অবস্থায় মাতাল হয়ে গভীর রাতে বাবলু ভাইয়ের বাড়ি গানপাউডার দিয়ে তারা পুড়িয়ে দিয়েছে।
সুইট আরও বলেন, ওই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সেই সাথে আপানাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, তাদেরকে দল থেকে বহিষ্কার করতে হবে। আইন ও নিয়ম বহির্ভূতভাবে যাকে তাকে নোটিশ পাঠান, শোকজ করেন। কিন্তু যারা অগ্নিসংযোগ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেন নাই। মালোপাড়া ফাঁড়ি থেকে যে অস্ত্র লুট হয়েছে, সেটা একটু খতিয়ে দেখেন দড়িখরবোনা এলাকার সাথে মিলে যায় কিনা। ষষ্ঠিতলায় যুবদলের কর্মী রিয়াজ ভাই, রিয়াজ ভাইকে খুন করেছে র্তাতী লীগের রনি, সেই রনি এখন এখন তথাকথিত বিএনপির তথাকথিত সদস্য সচিব মামুন ভাইয়ের কোলে গিয়ে বসেছে। রনি খুনের আসামি হওয়ার পরও তাকে আইনের আওতায় আনা হবে না, গ্রেফতার দেখানো যাবে না, এটাই হচ্ছে বর্তমান বিএনপির অবস্থা। এখানেই শেষ নয়, আমরা কিছুদিন আগে নওহাটার ভুগরইলে দেখলাম যুবদল নেতা মিন্টু ভাইকে একজন সন্ত্রাসী খো*জ করতে গিয়েছিল খুন করার উদ্দেশে। সেদিন মিন্টু ভাই বাসায় ছিল না, তার বৃদ্ধ পিতা দরজা খুলে বলেছিল আসসালামু আলাইকুম, বাবারা তোমরা কারা? ডমন্টু ভাইয়ের বাবাকে কোনো উত্তর না দিয়ে গুলি করা হয়েছিল।সেই ফুটেজ দেখেন, কে সেই ব্যক্তি, কে তার দোসর? এটাই সেই পূর্বের নেতা, যার নাম মামুনুর রশিদ, তার বডিগার্ড, এই হচ্ছে রাজশাহী মহানগর বিএনপির অবস্থা। এরা বিএনপির নেতা হতে পারে না।
এ সময় সুইট আরও বলেন, জনবিচ্ছিন্ন সন্ত্রাসীরা আমাদের নেতা হতে পারে না। এই শান্তির নগরীতে তাদের সাবধান করে দিতে চাই। সময় থাকতে সম্মান নিয়ে বিদায় হয়ে যান। আর না হলে জনস্রোতে পদ্ম পার হয়ে ইন্ডিয়া চয়ে যাবেন। বাবলু ভাইয়ের ওপর হামলাকারীদের ওপর অবিলম্বে দল থেকে বহিস্কারের দাবি জানাচ্ছি।
বোয়ালিয়া থানার সাবেক সাধারণ সম্পাদক রবিউল আলম মিলু বলেন, মহানগরে ঈশা-মামুন কমিটিতে ঢুকিয়েছে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের লোককে। শহরে তিনটা মার্ডার হয়েছে। মামুনের নেতৃত্বে ঈশা ভাইয়ের নেতৃত্বে হামলা হয়েছে। এই দুজন মাস্টারমাইন্ড। বিএনপির ত্যাগী নেতার নামে কেস দিয়ে এ কাজ করছে। র এর এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে। থানাতে মানা করে দিচ্ছে। মামুনুর রশীদ মামুন তার বডিগার্ড হলো আওয়ামী লীগ যুবলীগের ছেলেপেলে। ভাস্তে জাতীয়তাবাদী আওয়ামী লীগ। র এর একটা এজেন্ট বিএনপির ঘাটিকে নষ্ট করার চেষ্টা করছে। প্রশাসনকে বলতে চাই, তাদের কথা শুনবেন না।
কর্মসূচিতে বিভিন্ন ফেস্টুন ও ব্যানার প্রদর্শন করা হয়।