ঢাকা বুধবার, ৭ই মে ২০২৫, ২৪শে বৈশাখ ১৪৩২


ধর্মঘটে পণ্য খালাস বন্ধ, আটকে আছে ৮০০ জাহাজ


২৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৮:০০

সংগৃহিত

চাঁদপুরের মেঘনা নদীতে সারবোঝাই ‘এমভি আল-বাখেরা’ জাহাজে ৭ খুনের প্রকৃত কারণ উদঘাটন, হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও নিহত ব্যক্তিদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়াসহ চার দাবিতে দেশব্যাপী কর্মবিরতি পালন করছেন নৌযান শ্রমিকরা।

বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের ডাকা এ ধর্মঘটের কারণে দুই দিন ধরে বন্ধ হয়ে আছে দেশের অর্ধশতাধিক বন্দর ও ঘাটে পণ্য পরিবহন ও খালাসের কাজ। এছাড়া আটকে আছে প্রায় ৮০০ জাহাজ।

সরেজমিন দেখা গেছে, বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া নৌযানের শ্রমিকদের এই কর্মবিরতিতে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙর থেকে সব ধরনের পণ্য খালাস বন্ধ হয়ে গেছে। পাশাপাশি কর্ণফুলী নদীর ১৬টি ঘাটসহ দেশের অভ্যন্তরীণ নৌপথে পণ্য পরিবহন পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। শত শত লাইটার জাহাজ অলস বসে আছে। আমদানি করা পণ্য লাইটারিং বন্ধ হওয়ায় বহির্নোঙরে অলস বসে আছে ২০টির বেশি বিদেশি মাদার ভেসেল।

লাইটার জাহাজ নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বাংলাদেশ ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট কো-অর্ডিনেশন সেলের তথ্য অনুযায়ী, নৌযান শ্রমিকদের কর্মবিরতির কারণে দেশের ৫৭টি ঘাটে ৭৩৮টি জাহাজে আটকা পড়েছে প্রায় ১০ লাখ ১১ হাজার ২৩৫ টন পণ্য। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি জাহাজ আটকা পড়েছে যশোরের নোয়াপাড়া ঘাট, নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর ঘাট, মেঘনা ঘাট ও সিরাজগঞ্জের ঘোড়াশাল ঘাটে। কর্ণফুলী নদী এবং ঘাটেও বিপুল সংখ্যক লাইটারেজ জাহাজ পণ্য নিয়ে অলস ভাসছে।

বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন সচিব আতিকুল ইসলাম টিটু বলেন, চাঁদপুরে জাহাজে ৭ খুনের ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরপরই প্রশাসনের কাছে চার দফা দাবি জানিয়ে তা বাস্তবায়নে ৭২ ঘণ্টা সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। এ চার দাবির মধ্যে রয়েছে- নিহত শ্রমিকদের পরিবারের জন্য সরকারিভাবে ২০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ ঘোষণা, সব নৌপথে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, ডাকাতি বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ। তবে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হয়নি।

সংগঠনটির সভাপতি শাহ আলম বলেন, আমাদের দাবি পূরণ না করা পর্যন্ত শ্রমিকদের কাজে নামানো সম্ভব হবে না। আমরা দাবিগুলো বলেছি। বর্তমানে তৈল-গ্যাস, কয়লা ও বালুসহ সব ধরনের পণ্যবাহী নৌযান চলাচল এবং পণ্য ওঠা-নামা বন্ধ রয়েছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ ধর্মঘট চলবে।

বাংলাদেশ কার্গো ভেসেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাঈদ আহমেদ বলেন, আন্দোলনকারী শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সুরাহার চেষ্টা চলছে। বিষয়টি নিয়ে ডিজি শিপিংয়ের পক্ষ থেকে আলোচনার চেষ্টা করছেন। তাদের রোববার বৈঠকে বসার কথা রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, বর্তমানে ৮০০টি জাহাজ বিভিন্ন স্থানে আটকা পড়েছে। যেখানে ১০ লাখের বেশি পণ্য আছে। এ সমস্যার দ্রুত সমাধান না হলে দেশে পণ্যের সংকট সৃষ্টি হতে পারে।