ঢাকা মঙ্গলবার, ৩০শে এপ্রিল ২০২৪, ১৮ই বৈশাখ ১৪৩১


ভুল চিকিৎসা : সেন্ট্রাল হাসপাতালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ


১৯ জুন ২০২৩ ০৫:৩০

সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতি মাহবুবা রহমান আঁখির মৃত্যুর ঘটনায় আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

রোববার (১৮ জুন) বিকেলে রাজধানীর নিপসমে ভিটামিন ‘এ প্লাস’ ক্যাম্পেইন কর্মসূচির উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।

এ সময় তিনি বলেন, সেন্ট্রাল হাসপাতালের ঘটনাটি আমাদের নজরে এসেছে। সেখানে একজন প্রসূতি মায়ের মৃত্যু খুবই দুঃখজনক।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সেন্ট্রাল হাসপাতালে আমরা টিম পাঠিয়েছিলাম, কী কী জিনিসের ঘাটতি ছিল সেখানে গিয়ে তারা সার্বিক অবস্থা দেখেছে। অপারেশনসহ কিছু কার্যক্রমও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যে পর্যন্ত তাদের ঘাটতিগুলো পূরণ না হবে, সে পর্যন্ত তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে দেওয়া হবে না।

তিনি বলেন, সেন্ট্রাল হাসপাতালের বিরুদ্ধে আমরা আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। এখন তো বিষয়টি পুরোপুরি আইনের হাতে চলে গেছে। এখন যা ব্যবস্থা নেওয়া হয়, সেটা আইনানুযায়ী নেওয়া হবে।

এর আগে রোববার (১৮ জুন) দুপুর ১টা ৪৩ মিনিটে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে মারা যান মাহবুবা রহমান আঁখি।

জানা গেছে, সেন্ট্রাল হাসপাতালের গাইনি ও প্রসূতি বিভাগের চিকিৎসক ডা. সংযুক্তা সাহার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নরমাল ডেলিভারির তথ্য পেয়ে গত ৯ জুন কুমিল্লা থেকে সেন্ট্রাল হাসপাতালে আসেন আঁখি। কিন্তু সেদিন ডা. সংযুক্তা সাহার বদলে ওই নারীর ডেলিভারি করতে যান ডা. মিলি।

এ সময় ডা. মিলি ওই প্রসূতির পেট কাটতে গিয়ে মূত্রনালি ও মলদ্বার কেটে ফেলেন। সঙ্গে সঙ্গে প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ হয়ে রোগী জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। অজ্ঞান অবস্থায় সিজার করে বাচ্চা বের করা হয়। এতে বাচ্চার হার্টবিট কমে গেলে তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। কিছুক্ষণ পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নবজাতককে মৃত ঘোষণা করে।

পরবর্তীতে ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তির পর সেখানে আঁখিকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়। তবে তার কোনো ইমপ্রুভমেন্ট ছিল না। চিকিৎসকরাও জানিয়েছিলেন, আঁখির ইমপ্রুভমেন্ট হওয়ার সম্ভাবনা কম। তার শরীরের কিডনি, লিভার, হার্ট এবং অন্য কোনো অংশ কাজ করছিল না। এরমধ্যে ব্রেন স্ট্রোকও করেন আঁখি, সেই সঙ্গে রক্তক্ষরণও বন্ধ হচ্ছিল না তার। ফলে রক্তক্ষরণ বন্ধ না হওয়ার কারণে শরীরের অন্য অংশগুলো কাজ করতে ব্যর্থ হয়ে পড়েছিল। এতে হাসপাতালে ভর্তির পুরো সময় তাকে রক্ত দিতে হয় এবং যতক্ষণ পর্যন্ত তার নিশ্বাস চলবে ততক্ষণ পর্যন্ত রক্ত দিতে হবে বলে জানিয়েছিলেন চিকিৎসকরা।

গত বুধবার (১৪ জুন) এজাহারনামীয় দুই আসামি ডা. মুনা সাহা ও ডা. শাহজাদী মুস্তার্শিদা সুলতানাকে গ্রেপ্তার করেছে ধানমন্ডি থানা পুলিশ।

এ ঘটনায় গত শুক্রবার সেন্ট্রাল হাসপাতালে অভিযান চালায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। অভিযানে হাসপাতালটির চিকিৎসা ব্যবস্থাপনায় বেশ কিছু ঘাটতি দেখতে পান অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। জরুরি চিকিৎসায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় আইসিইউসহ প্রতিষ্ঠানটিতে সব ধরনের অস্ত্রোপচার বন্ধের নির্দেশ দেয় অধিদপ্তর। পাশাপাশি ডা. সংযুক্তা সাহাকে ওই প্রতিষ্ঠানে বিশেষজ্ঞ সেবা দেওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।