ঢাকা শুক্রবার, ১৭ই মে ২০২৪, ৩রা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১


ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আবারো হামলার চেষ্টা, গুলিতে ৩ জন নিহত


২৮ মার্চ ২০২১ ০২:৪০

ছবি- সংগৃহিত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুলিশ ও বিজিবির সঙ্গে মোদিবিরোধী বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন। শনিবার (২৭ মার্চ) সন্ধ্যা ৬টার দিকে সদর উপজেলার নন্দনপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- নন্দনপুরের হারিয়া গ্রামের আবদুল লতিফ মিয়ার ছেলে জুরু আলম (৩৫), সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার দাবিড় মিয়ার ছেলে বাদল মিয়া (২৪) ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার মৈন্দ গ্রামের জুরু আলীর ছেলে সুজন মিয়া (২২)।

এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১৫ জন। এদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় কাউসার মিয়া, নুরুল আমিন, বাছির মিয়া ও ছাদেক মিয়া নামে চারজনকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিকেলে নন্দনপুর বাজার এলাকায় পুলিশ ও বিজিবির সঙ্গে মোদিবিরোধী আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ বাধে। এ সময় বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়। এদের মধ্যে কয়েকজনকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তিনজনকে মৃত ঘোষণা করেন।
তিনজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আব্দুল্লাহ আল মানুন জানান, সন্ধ্যায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তিনজনকে হাসপাতালে আনা হয়। তবে হাসপাতালে আনার আগেই তাদের মৃত্যু হয়। তিনজনই গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন।

এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সরাইল উপজেলায় মাদরাসাছাত্র ও স্থানীয়দের বের করা বিক্ষোভ মিছিল থেকে পুলিশ ক্যাম্পে হামলা চালানো হয়েছে। এতে ক্যাম্পে থাকা ২৫ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। শনিবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে আহত পুলিশ সদস্যদের নাম জানা যায়নি। তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেলে নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদ করে অরুয়াইল বাজারে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন মাদরাসাছাত্ররা। এতে স্থানীয় বাসিন্দারাও অংশ নেন। পরে মিছিল থেকে অরুয়াইল পুলিশ ক্যাম্পে হামলা চালানো হয়। হামলাকারীরা পুলিশ সদস্যদের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকেন। এতে অন্তত ২৫ পুলিশ সদস্য আহত হন। পরে পুলিশ হামলাকারীদের লক্ষ্য করে টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

সরাইল থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) কবির হোসেন জানান, বিক্ষোভ মিছিল থেকে হঠাৎ করে পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা চালানো হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

এর আগে নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে গতকাল শুক্রবার (২৬ মার্চ) বেলা ৩টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন মাদরাসাছাত্ররা। তারা ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন। এরপর শহরের কাউতলি এলাকায় পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে গিয়েও হামলা চালান বিক্ষোভকারীরা।

এ সময় পুলিশ শর্টগানের গুলি ছোড়ে। এ ঘটনায় আশিক (২০) নামে এক যুবক আহত হন। পরে তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। নিহত আশিক জেলা সদরের দাতিয়ারা এলাকার সাগর মিয়ার ছেলে।

এ ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানা পুলিশের ২নং ফাঁড়ির পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) নূরে আলমসহ অন্তত ১৫ জন আহত হন। এর মধ্যে নূরে আলমকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।