ঢাকা শুক্রবার, ২রা মে ২০২৫, ২০শে বৈশাখ ১৪৩২


‘নির্বাচনের জন্য যথেষ্ঠ সুন্দর পরিবেশ আছে’


১ অক্টোবর ২০১৮ ১৯:৫৮

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশে নির্বাচন করার জন্য ‘যথেষ্ট সুন্দর পরিবেশ আছে’ এবং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়ও সেটাই থাকবে। শনিবার ভয়েস অব আমেরিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

সমান সুযোগ আছে কি না ভয়েস অব আমেরিকার এই প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগের সরকারগুলো নিজেদের ইচ্ছেমত নির্বাচন কমিশন করত। আর তার সময়ে রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে সার্চ কমিটি করে নির্বাচন কমিশন হয়। আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাচন কমিশন গঠনের ক্ষেত্রে ‘এই স্বচ্ছতা’ আনতে পেরেছে।

গত দশ বছরে স্থানীয় সরকারের নির্বাচনগুলো মিলিয়ে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার নির্বাচন হয়েছে এবং সেখানে মানুষ উৎসবের আমেজে ভোট দিয়েছে। অবশ্যই বর্তমানে ইলেকশন করবার মত সুন্দর একটা পরিবেশ আছে এবং নির্বাচন কমিশন সে নির্বাচন করতে পারবে।

রাজশাহী, সিলেট ও বরিশাল সিটি করপোরেশনে সাম্প্রতিক নির্বাচনের উদাহরণ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুই সিটিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জয়ী হলেও সিলেটে বিএনপির প্রার্থীর জয়ী হয়েছে। সিলেটে আমাদের প্রার্থী মাত্র আড়াই হাজার ভোটের ব্যবধানে হেরে গেল। এত কম ভোটে যে হারল, আমরা তো ওই ভোট পরিবর্তন করা, বা হাত দেওয়া… আমরা তো কিছু বলিনি। আমাদের প্রার্থীও সেইভাবে নিয়েছে। এটা কি প্রমাণ করে না যে এখন ইলেকশন করার মত যথেষ্ট সুন্দর পরিবেশ আছে?

আগামী নির্বাচনেও সেই পরিবেশ থাকবে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটা কথা আপনাদেরকে মনে রাখতে হবে। আমার রাজনীতি কিসের জন্য, আমি কেন রাজনীতি কেন, আমি ক্ষমতায় থেকে কি কাজ করছি… আমি আমার নিজের ভাগ্য গড়ছি? আমার ছেলেমেয়ের ভাগ্য গড়ছি? আমি দেশের মানুষ ভাগ্য গড়ছি।

বাংলাদেশ বিগত বছরগুলোতে যে অর্থনৈতিক উন্নয়ন করেছে- সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার যদি সঠিকভাবে কাজ না করে তাহলে বেসরকারি খাত একা কিছু করতে পারে না। বেসরকারি খাতের কাজ করার সুযোগ সরকারকেই করে দিতে হয়। তার সরকার সেটাই করে দিয়েছে।

দেশে বিদ্যুৎ খাতে উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখন একটা গ্রামের মেয়ে আমাকে বলে, আপা আমি এখন রাইস কুকারে ভাত রাঁধি, এই যে একটা পরিবর্তন… গ্রামে যাতে নাগরিক সুবিধা পৌঁছে যায়, আমি সেই ব্যবস্থা নিচ্ছি।

ভারতের আসামে সংশোধিত নাগরিকপঞ্জি থেকে বাদ পড়া ৪০ লাখের বেশি মানুষকে ‘অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসী’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটা বোধহয় তাদের (ভারতের) পলিটিক্স। এটা তাদের পলিটিক্স তারা বলছে। আমি তো মনে করি না কোনো বাংলাদেশি সেখানে আশ্রয় নিয়েছে। আমাদের অর্থনীতি যথেষ্ট শক্তিশালী ও মজবুত। সুতরাং বাংলাদেশিরা কেন সেখানে অবৈধ আশ্রয় নেবে। তারা তাদেরই নাগরিক। তারা যদি কাউকে অবৈধ বলে এটা সম্পূর্ণ তাদের ব্যাপার। তবে বিষয়টি নিয়ে আমি কিছুটা কথা বলেছি। তাদের প্রধানমন্ত্রীর (নরেন্দ্র মোদি) সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তাঁরা বলেছেন, তাদের (বাংলাদেশে) ফেরত পাঠানোর মতো চিন্তা তাঁদের নেই।’

রোহিঙ্গা বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা সঙ্কটে সবচেয়ে সবচেয়ে বেশি সমর্থন দিয়েছে বাংলাদেশের মানুষ। দেশের মানুষের অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছি। বিশেষ করে কক্সবাজারের মানুষগুলি। কারণ তাদের জমি…। তাদেরকে আমি ধন্যবাদ জানাই। সেই সঙ্গে বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক প্রতিটি সংস্থা।… সারা বিশ্বই বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ফেরার জন্য নিরাপদ পরিস্থিতি তৈরি করতে কাজ করছে।

রোহিঙ্গদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা চাচ্ছি যে প্রথমে আমরা কিছু পাঠাব, তাদের সাথে ওরা কি রকম ব্যবহার করে এটা দেখব, ইতোমধ্যে আমরা ভাসান চরে তাদের জন্য ঘরবাড়ি তৈরি করে দিচ্ছি, তারা থাকতে পারবে।

আরকেএইচ