ঢাকা বুধবার, ২রা জুলাই ২০২৫, ১৮ই আষাঢ় ১৪৩২


পদ্মা সেতুর পরামর্শক নিয়োগে প্রাথমিকভাবে অনিয়ম-দুর্নীতির প্রমাণ মিলেছে


১ জুলাই ২০২৫ ১৯:৩৬

সংগৃহীত

পদ্মা সেতুর পরামর্শক নিয়োগে প্রাথমিকভাবে অনিয়ম-দুর্নীতির প্রমাণ মিলেছে বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান আব্দুল মোমেন।

 

তিনি বলেন, যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ থাকার পরও এই মামলা পরিসমাপ্তি করা হয়। গেল জানুয়ারিতে শুরু হওয়া অনুসন্ধানে ইতোমধ্যে পদ্মা সেতুর পরামর্শক নিয়োগে প্রাথমিকভাবে অনিয়ম-দুর্নীতির প্রমাণও মিলেছে।

 

মঙ্গলবার (১ জুলাই) দুদকের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান তিনি।

 

এসময় তিনি বলেন, গায়ের জোরেই পদ্মা সেতু দুর্নীতি মামলায় আসামিদের অব্যাহতি দিয়েছিল তৎকালীন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

 

এক প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, পদ্মা সেতুর পরামর্শক নিয়ে যে বিভ্রান্তি ছিল সেটা নিয়ে মামলা হয়। মামলার উপাদানগুলো সঠিক থাকা সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত আদালতে এফআরটি (ফাইনাল রিপোর্ট ট্রু) বা নিষ্পত্তি প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।

 

গত ডিসেম্বরে দায়িত্ব নেওয়ার পর মামলাটি আবার চালু করা হয় জানিয়ে তিনি বলেন, দায়িত্ব নেওয়ার পর আমরা এটি পুনরায় বিবেচনা করি এবং আমাদের মনে হয় যে, অনেকটা গায়ের জোরে অভিযুক্তদের মামলা থেকে দায়মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এই মামলাটিকে পুনরুজ্জীবিত করা প্রয়োজন। এজন্য আমরা নতুন করে তদন্ত শুরু করি।

 

পদ্মা সেতুর অনিয়ম প্রসঙ্গে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, সরকারি বিধি-বিধান মেনে পি পিএ- পি পি আর পুরোপুরি অনুসরণ করেই কাজ করতে হয়। পিপিএ পিপিআর অনুসরণ করে যে কাজ করার কথা তাতে আমরা যে মূল্যায়ন কমিটি গঠন করি, সেই কমিটি উদ্দেশ্যমূলকভাবে একাধিকবার পরিবর্তন করা হয়েছে। অসৎ উদ্দেশ্য কিংবা অপরাধ প্রবণতার কারণে এটি করা হয়েছে।

 

তিনি আরও বলেন, বড় প্রকল্প করতে গেলে একই জিনিস অনেকবার ব্যবহার করার সুযোগ থাকে সেক্ষেত্রে যে জিনিস একবার ক্রয় করলে বারবার ব্যবহার করতে পারি সেটা একাধিকবার ক্রয় দেখানো সমীচীন না। এরকম কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। আমরা যখন যৌথ মূল্যায়ন করি কনসাল্টেন্টের তাদের যেসব সিভি মূল্যায়ন করা কথা ছিল, সেগুলো সেভাবে করিনি। এখানে অনিয়ম পরিলক্ষিত হয়েছে। 

 

২০১২ সালে বিশ্ব ব্যাংক পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির আশঙ্কায় অর্থায়ন স্থগিত করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক মহলের চাপের মুখে এসে একই বছরের ১৭ ডিসেম্বর বনানী থানায় মামলা দায়ের করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তৎকালীন উপপরিচালক আবদুল্লাহ আল জাহিদ। মামলায় মোট সাতজনকে আসামি করা হয়।

 

মামলায় আসামিরা ছিলেন- সেতু বিভাগের তৎকালীন সচিব মোশাররফ হোসেইন ভুঁইয়া, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কাজী মো. ফেরদৌস, সাবেক সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রিয়াজ আহমেদ জাবের, ইপিসির উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম মোস্তফা, কানাডীয় প্রকৌশলী প্রতিষ্ঠান এসএনসি লাভালিনের ভাইস-প্রেসিডেন্ট কেভিন ওয়ালেস, আন্তর্জাতিক প্রকল্প বিভাগের সাবেক ভাইস-প্রেসিডেন্ট রমেশ শাহ ও সাবেক পরিচালক মোহাম্মদ ইসমাইল।

 

মামলার প্রধান আসামি ছিলেন তৎকালীন সেতু বিভাগের সচিব মো. মোশাররফ হোসেন ভুঁইয়া। তাকে গ্রেফতার করে সাময়িকভাবে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়, তবে পরে তিনি জামিনে মুক্তি পেয়ে পুনরায় চাকরিতে ফিরে আসেন।