ঢাকা মঙ্গলবার, ১লা জুলাই ২০২৫, ১৭ই আষাঢ় ১৪৩২


লিঙ্গ স্বীকৃতির দিনে হিজড়াদের মেহেদি ও সেলফি উৎসব


১২ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:৩৮

‘হিজড়া লিঙ্গ’ হিসেবে স্বীকৃতির সিদ্ধান্তের দিবসে রাজধানীর ছয়টি স্থানে হিজড়াদের নিয়ে ‘খোলা হাওয়া’ নামে মেহেদি ও সেলফি উৎসব করা হয়েছে। গবেষণা ও সমাজসেবামূলক প্রতিষ্ঠান ‘রি-থিংক’ আয়োজিত এই উৎসবে হিজড়ারা সবলিঙ্গের মানুষদের মেহেদি পরিয়ে দেন। মেহেদি পারার পাশাপাশি এসময় সবাই মেতে ওঠেন সেলফি উৎসবে। সৃষ্টি হয় আনন্দঘন পরিবেশের।

রোববার (১১ নভেম্বর) সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পযর্ন্ত স্বোপার্জিত স্বাধীনতা সড়ক, দুর্ঘটনা স্মৃতি স্থাপনা, ছবির হাট, সমাজ কল্যাণ অনুষদ চত্ত্বর ও ইডেন মহিলা কলেজ ফুটপাতে মেহেদি ও সেলফি উৎসব হয়। এছাড়া বেলা সাড়ে ১২টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত মেহেদি ও সেলফি উৎসব হয় বুয়েটে।

আয়োজক সংস্থা জানায়, পরিবার, স্কুল-কলেজ, কর্মক্ষেত্র ও বৃহত্তর সমাজের সবখানেই চরম ভাবে অবহেলিত হিজড়াদের জীবনমান উন্নয়নে বর্তমান সরকার বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। ২০১৩ সালের ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মন্ত্রীসভার এক বৈঠকে এই জনগোষ্ঠিকে আলাদ 'হিজড়া লিঙ্গ' হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

এর ফলে, হিজড়া জনগোষ্ঠির জীবনমান উন্নয়ন কার্যক্রম নীতিমালা- ২০১৩ গৃহীত হয়। এরই প্রেক্ষিতে ২০১৪ সালে তাদের ‘হিজড়া লিঙ্গ’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। আবার এই বছরের জানুয়ারিতে সিদ্ধান্ত হয় জাতীয় ভোটার তালিকায় নারী ও পুরুষের পাশাপাশি ‘হিজড়া’ একটি আলাদা লিঙ্গ পরিচয় হিসেবে স্থান পাবে।

সেজন্য ‘হিজড়া লিঙ্গ’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার সিদ্ধান্তের দিনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করে রি-থিংক।

উৎসবে আসা হিজড়ারা জানান, তাদের পরিবার কখনোই চায় না, তারা পরিবারের বাইরে গিয়ে অবহেলিত ভাবে জীবনযাপন করুন। কিন্ত জন্মের পর একটা সময় তাদের বাসা বাড়ির আশ-পাশে মানুষের নেতিবাচক দৃষ্টি ভঙ্গি কারণে তাদের চলে আসতে হয় হিজড়া কমিউনিটিতে।

তারা বলেন, আমরা তো মানুষ। আমরাও চাই মানুষের মত বাঁচতে। সে জন্য দৃষ্ঠিভঙ্গি বদলিয়ে সকলের সহযোগিতা করা প্রয়োজন। যেমনটা, এগিয়ে এসেছে রি-থিংক।

মেহেদি ও সেলফি উৎসব ছাড়াও সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় বিন্দুধারীতে রি-থিংকের আয়োজন করা হয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। এই অনুষ্ঠানে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত হিজড়ারা পারফর্ম করবেন-নাচ, গান, আবৃতি ও অভিনয়।

এ অুনষ্ঠানে অতিথি হিসেবে সংগীত পরিবেশন করবেন, প্রখ্যাত কন্ঠশিল্পী, প্লেব্যাক সিঙ্গার, আন্তজার্তিক খ্যাতি সম্পন্ন, জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত, টিভি ও স্বাধীন বাংলাদেশ বেতার কেন্দ্রের শিল্পী এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল আলম, বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী,সংগীত পরিচালক, সুরকার, গীতিকার (রেডিও ও টেলিভিশন) আবু বক্কর সিদ্দিক ও চন্দনা মজুমদার।

এমএ