ঢাকা শনিবার, ২০শে এপ্রিল ২০২৪, ৭ই বৈশাখ ১৪৩১


‘আমার মেয়েও লজ্জিত, প্রকাশ্যে ক্ষমা চান’


২৩ অক্টোবর ২০১৮ ০১:২৮

ফাইল ফটো

সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনে লাইভ টকশোতে নারী সাংবাদিকের প্রতি অশোভন আচরণ ও কটূক্তি করে দেশজুড়ে সমালোচিত নবগঠিত ঐক্যফ্রন্টের নেতা ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন। এজন্য এখনো তিনি প্রকাশ্যে ক্ষমা চাননি। এমনকি এখন পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে তিনি অনুতপ্ত এমন কোনো মনোভাবও প্রকাশ্যে দেখাননি। তাঁকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার কথা বলে ব্যর্থ হয়েছেন ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ও গণফোরাম নেতা ড. কামাল। এবার তাঁকে ক্ষমা চাওয়ার কথা বলে ব্যর্থ হলেন ঐক্যফ্রন্টের আরেক নেতা ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আজ ব্যারিস্টার মইনুলকে ফোন দিয়েছিলেন। বলেছেন, আমারও মেয়ে আছে। আপনার কথায় অস্ট্রেলিয়ায় থাকা আমার মেয়েও লজ্জিত হয়েছে। ঐক্যের সবাই বিষয়টি নিয়ে অস্বস্তিতে আছেন। আপনি প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়ে বিষয়টির সমালোচনা বন্ধ করুন। কিন্তু ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টি উড়িয়ে দেন ব্যারিস্টার মইনুল। তিনি কোনো ক্ষমা চাইবেন না বলেই জানান।

এর আগে ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেনও ব্যারিস্টার মইনুলকে ক্ষমা চাইতে বলে ব্যর্থ হন। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ দুই নেতার দলহীন ব্যারিস্টার মইনুলকে ক্ষমা চাওয়ার কথা বলে ব্যর্থ হলেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের প্রশ্ন, তাহলে কার কথা শুনবেন ব্যারিস্টার মইনুল।

উল্লেখ্য, গত ১৬ অক্টোবর রাতে একাত্তর টেলিভিশনের একাত্তর জার্নাল নামের সংবাদভিত্তিক এক টকশোতে নারী সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টি ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে প্রশ্ন করেছিলেন, আপনি কি জামায়াতের প্রতিনিধি হয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে অংশগ্রহণ করেছেন? এর উত্তরেই মাসুদা ভাট্টিকে মইনুল হোসেন বলেন, ‘আপনি চরিত্রহীন বলে মনে করতে চাই।’ অবশ্য মাসুদা ভাট্টির প্রশ্ন ছিল প্রাসঙ্গিক, কারণ এর মাত্র দুদিন আগে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের একটি অনুষ্ঠানে যোগদান করেছিলেন এবং সেখানে বক্তব্য প্রদান করেছিলেন। বলেছিলেন, তাঁর সঙ্গে শিবিরের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ আছে। ব্যারিস্টার মইনুলের ওই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম খুঁজলে এখনো পাওয়া যায়। আর মাসুদা ভাট্টিকে লাইভ টকশোতে চরিত্রহীন বলার পর ক্ষমা না চেয়ে বরং নিউ নেশন নামের একটি পত্রিকার প্রকাশক হিসেবে এক বিবৃতি দিয়েছেন মইনুল হোসেন। সেই বিবৃতিতে তিনি এই ঘটনার পূর্বাপর যে বিশ্লেষণ করেছেন, তা এক প্রকারের আত্মপক্ষ সমর্থন। মইনুল হোসেন বিবৃতিতে বলেছেন, ফেসবুকসহ নানা রকম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তিনি ঐ নারী সংবাদ কর্মী সম্পর্কে অনেক খারাপ তথ্য পেয়েছেন। এখন প্রশ্ন হলো, খারাপ তথ্য পেলেই কি একজন সংবাদ কর্মীকে, একজন নারীকে কুৎসিত অরুচিকর কথা প্রকাশ্যে বলা যায়। অবশ্য ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন সবসময় এধরনের অশ্লীল, কুরুচিপূর্ণ এবং নোংরা ভাষায় কথা বলার জন্য প্রসিদ্ধ।