ঢাকা বুধবার, ২৪শে এপ্রিল ২০২৪, ১১ই বৈশাখ ১৪৩১


বিএনপির সুবিধাভোগী টেলিটকের এমডি'র বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়


১৮ আগস্ট ২০২১ ০৯:৩৯

তিনি ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার কার্যালয়ের ডিভিশন ইঞ্জিনিয়ার। বিএনপি ঘরনা হিসেবে পরিচিত। এখন ভোল পাল্টে নানা ঘাট পার হয়ে হয়েছেন টেলিটকের এমডি। বিভিন্ন সময়ে দূর্নিতির অসংখ্য অভিযোগ থাকার পরেও বর্তমান টেলিটক টেলিটক এমডি ও তার সিন্ডিকেটে অসহায় প্রতিষ্ঠানটির সবাই।

ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রটোকল বা ভিওআইপির চোরাকারবার সরকারের রাজস্ব ফাঁকির অন্যতম মাধ্যম হিসেবে এখনো সচল। দায়িত্বশীলদের চোখ ফাঁকি দিয়ে এই ব্যবসায় ভর করে শত শত কোটি টাকা চলে যাচ্ছে একটি চক্রের কবজায়। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর জালে মাঝেমধ্যে জড়িতদের কেউ কেউ ধরা পড়েন। কিন্তু, তবুও চলছে অবৈধ ভিওআইপি। অবৈধ ভিওআইপিসহ অসংখ্য অভিযোগের তীর টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাহাবউদ্দিনের বিরুদ্ধে। অভিযোগ রয়েছে বিএনপি ঘরোনা এই প্রকৌশলী খালেদা জিয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী কার্য্যালয়ের ডিভিশন ইঞ্জিনিয়ার পদে ছিলেন। সরকার পরিবর্তনের সাথে সাথে আওয়ামীলীগের সাইনবোর্ড গায়ে চাপিয়ে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদ বাগিয়ে নিয়েছেন। এরপরই একটি সিন্ডিকেট গড়ে হাজার কোটি টাকা লুটপাট করছে সাহাবউদ্দিন।

"টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড এর দূর্নীতিবাজ ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাহাবউদ্দিন এর সীমাহীন দূর্নীতির আলামত ধ্বংস/নষ্ট সম্পর্কে একটি অবহিত ও টেলিটক এর বহুল জনপ্রিয় টেলিপে অ্যাপস্ পুনরায় চালুকরণ প্রসঙ্গে" শিরোনামে জৈনিক নুরুল জিহৃদ নামে এক ব্যক্তি অভিযোগ দেন ডাক ও টেলিযােগাযােগ মন্ত্রী বরাবর। যেখানে তিনি কিছু সুনির্দিষ্ট অভিযোগ তুলেন টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাহাবউদ্দিনের বিরুদ্ধে। এছাড়াও, র‍্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-১০ ও বিটিআরসি’র এনফোর্সমেন্ট এন্ড ইন্সপেকশন ডিরেক্টরেট এর পরিদর্শকদের সমন্বয়ে গঠিত পরিদর্শকদল গত ৩ ফেব্রুয়ারি রাজধানী ঢাকার নিউ মার্কেট, তুরাগ ও শাহ আলী থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে।

উক্ত অভিযানে অবৈধ ভিওআইপি কার্যক্রমে ব্যবহৃত বিপুল সংখ্যক মালামাল জব্দ করে। সেই সময় অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসা চক্রের ৩ জন ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা দায়ের করা হয়। যার প্রেক্ষিতে বিটিআরসি একটি পরিদর্শকদল সরেজমিনে পরিদর্শন করে প্রতিবেদন দাখিল করে। যেখানে টেলিটকের বিরুদ্ধে ভিওআইপি ব্যবসার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ উল্লেখ করে। যাতে প্রমানিত হয়, টেলিটক ভিওআইপি ব্যবসার সাথে সংশ্লিষ্ট। যে অভিযোগ তুলেছিল নুরুল জিহৃদ টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বিরুদ্ধে। কিন্তু, এতো কিছুর পরও একজন সংসদ পুত্রের আর্শিবাদে স্বপদে বহাল রয়েছেন টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাহাবউদ্দিন।

মন্ত্রী বরাবর চিঠিতে নুরুল জাহিদ উল্লেখ করেন, টেলিপে অ্যাপস টেলিটক গ্রাহকদের কাছে একটি জনপ্রিয় অ্যাপস। এই অ্যাপ এর মাধ্যমে টেলিটক এর গ্রাহকরা পল্লী বিদ্যুৎ এর বিল প্রদান করে থাকে এবং এই অ্যাপস্ এর মাধ্যমে টেলিটক ভালাে পরিমাণ রেভিনিউ আহরণ করে। কিন্তু ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাহাবউদ্দিন, মার্কেটিং বিভাগের জিএম প্রভাস চন্দ্র ও আইটির জিএম নুরুল মাবুদ বিকাশ এর কাছ থেকে অর্থ গ্রহণ করে ১৫ই জুন টেলিপে অ্যাপটি বন্ধ করে দেয়। বর্তমানে টেলিটক গ্রাহকদের বিভিন্ন নাম্বার থেকে এসএমএস দিয়ে বিকাশ এর মাধ্যমে পল্লী বিদ্যুৎ এর বিল প্রদানের নােটিফিকেশন পাঠাচ্ছে। এত করে টেলিটক এর রিটেইল পয়েন্ট মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। রিটেইল পয়েন্ট থেকে জিজ্ঞেস করলে কারিগরী ত্রুটির জন্য অ্যাপস্ বন্ধ বলে জানায়। প্রযুক্তির এই যুগে একটি অ্যাপস্ এর সার্ভিস এতদিন বন্ধ থাকার কোন সুযােগ নাই। বাস্তবে ঐ তিনজন কর্মকর্তা বিকাশ এর কাছ থেকে অবৈধ সুবিধা নিয়ে অ্যাপসটি বন্ধ রেখেছে। টেলিটকের স্বার্থে উক্ত অ্যাপটি পুনরায় চালু করা অতীব প্রয়ােজন।
এছাড়াও নুরুল জাহিদ তার অভিযোগে বলেন, আপনার কাছে আমাদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সম্পর্কে এত দূর্নীতির অভিযােগ দেওয়ার পরেও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না হওয়ায় আরাে বেশি মাত্রায় বেপরােয়া হয়ে যাচ্ছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে পত্র যাওয়ার পর তিনি সকল অভিযােগের আলামত ধ্বংস করার জন্য তার ব্যক্তিগত সিন্ডিকেটকে দায়িত্ব দিয়েছেন। ইতিমধ্যেই সাহাবউদ্দিন সাহেবের রুমের সামনের নির্দিষ্ট তারিখের বিশেষ মুহর্তের সিসিটিভি ফুটেজ মুছে ফেলা হয়েছে। যে সিসিটিভি ফুটেজ থেকে টেলিটক এক কর্মকর্তা'র সাথে এমডি সাহেবের অন্তরঙ্গ মুহর্তের প্রমাণ পাওয়া যেত। এছাড়াও টেসিস ব্যবস্থাপনা পরিচালক এর সাথে একাধিক বার কথা বলে মাস্ক কেনার দূর্নীতির আলামত গােপন করার চেষ্টা করছেন। তার এইসব তথ্য জানে এমন কর্মকর্তাদের হুমকি দিচ্ছেন।

আবার এক সংসদ পূত্র তার গুলশান অফিসে কাউকে কাউকে ডেকে নিয়ে চাকুরী খাওয়ার হুমকিও দিচ্ছেন। সাহাবউদ্দিন সাহেব ও তার সিন্ডিকেট অতিমাত্রায় বেপরােয়া হয়ে পড়েছেন। সাহাবউদ্দিন সাহেব সন্দেহভাজন কর্মকর্তাদের ডেকে বলছেন এইসব বেনামী চিঠিতে আমার কিছুই হবে না। যেকোন অবস্থায়ই সচিব সাহেব তার পাশে থাকবেন; কারণ সচিব সাহেব তার ব্যাচ মেট। এই অবস্থায়, দেশের একমাত্র সরকারী মােবাইল অপারেটর টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড কে বাঁচাতে আপনার ব্যক্তিগত হস্তক্ষেপ প্রয়ােজন। অতএব, উপরােক্ত বিষয়াদি বিবেচনা করে প্রয়ােজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য বিনীত অনুরােধ করছি।

এছাড়াও নুরুল জাহিদ আরেক অভিযোগে উল্লেখ করেন, সাহাবউদ্দিন টেলিটক এর ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব গ্রহণ করার পর গতিশীল প্রতিষ্ঠানটি কাগজে কলমে প্রতিবছর অগ্রগতির রিপাের্ট পেলেও বাস্তবে স্থবির হয়ে পড়ছে টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড। মাননীয় মন্ত্রী আপনি বিভিন্ন প্রজেক্ট ও দিক নির্দেশনা এবং পরামর্শ দিলেও সাহাবউদ্দিন সাহেব তাহার নির্দিষ্ট বলয়ের বাইরে কোন কাজ করেন না। তিনি বিএনপি জামাতের কিছু দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তার সমন্বয়ে একটি দূর্নীতির বলয় সৃষ্টি করেছেন এবং চক্রের মূল নেতৃত্বে সাহাবউদ্দিন। সাহাবউদ্দিন নিজেও বিএনপি ঘরানার মানুষ; যদিও এখন আওয়ামীলীগের সাইনবাের্ড লাগিয়েছেন। মুখে ক্ষমতাসীন দলের মুখােশ পরলেও রাতের অন্ধকারে তিনি বিএনপি জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গ দিতে ব্যস্ত।

মূলত ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে কোম্পানির গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলাে তুলে দিচ্ছে সরকারবিরােধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত নেতাকর্মীদের হাতে। বিনিময়ে সাহাবউদ্দিন হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। এ ছাড়া তার পছন্দের কোম্পানি ছাড়া অন্য কেউ যাতে কাজ না পায়, সেভাবে প্রকল্পের স্পেসিফিকেশন তৈরি করা হয়। এভাবে পুরাে টেলিটক জুড়ে চলছে দুর্নীতি-লুটপাটের মহােৎসব। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলে বিদেশে টাকা পাচারের গােপন কারবার। ফলে সরকারি মােবাইল ফোন কোম্পানি এখন খাদের কিনারে গিয়ে ঠেকেছে। দুর্নীতি-লুটপাট আর ক্ষমতার অপব্যবহারের কারণে সরকারি ফোন কোম্পানি টেলিটকের এখন গ্রাহক নেই বললেই চলে।

সাহাবউদ্দিন হাওয়া ভবনের প্রভাবশালী তারেক রহমানের প্রয়াত ছােট ভাই আরাফাত রহমানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন ও খালেদা জিয়ার বােনের ছেলে তুহিন এর ভিওআইপি ব্যবসার পার্টনার ছিলেন। সাহাবউদ্দিন এর বিরুদ্ধেও বিএনপি জামায়াতের প্রভাবশালী নেতাদের অর্থের জোগান দেয়ার অভিযােগ আছে। তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে আরাফাত রহমানের পৃষ্ঠপােষকতায় তিনি বিটিসিএলে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেন। তখন এই সিন্ডিকেট সে আমলে শুধু অবৈধ ভিওআইপির মাধ্যমে এই খাত থেকে হাতিয়ে নেয় কয়েকশ' কোটি টাকা। হাওয়া ভবনের শেল্টার থাকায় সাহাবউদ্দিনের বিরুদ্ধে ওই সময় কেউ টু শব্দ করতে পারেনি। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর রাতারাতি এই কর্মকর্তা আওয়ামী লীগের জার্সি পরে তদবিরের মাধ্যমে বিটিসিএল -এর ক্রয় বিভাগের পরিচালক এর পদ বাগিয়ে নেন। বিটিসিএলের গুরুত্বপূর্ণ এই পদের জন্য যােগ্য অনেক সিনিয়র ও দক্ষ কর্মকর্তা থাকলেও তাদের ডিঙিয়ে তিনি পদটি বাগিয়ে নিতে সক্ষম হন।

অবশ্য বিটিসিএল’র ক্রয় বিভাগের পরিচালক থাকাকালীন একটি দুর্নীতির জন্য সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সুপারিশে প্রায় দুই বছরের জন্য তাকে ওএসডি করা হয়। কারণ তখন সাহাবউদ্দিনের দূর্নীতির কারণে বিটিসিএল এর টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (বিডি-পি৫৩) শীর্ষক প্রকল্পের ঋণ প্রত্যাহার করে নেয় বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন সহযােগী জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সী (জাইকা)। তার পরেও থামেনি সাহাবউদ্দিনের দূর্নীতি। জনৈক এমপি পূত্রের হাত ধরে এত বড় দূর্নীতি থেকে রেহাই পেয়ে যান সাহাবউদ্দিন ও ঐ এমপি পূত্রের মাধ্যমেই তখন তিনি টেলিটকের একটি বড় প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক এর দায়িত্ব পেয়ে যান এবং পরবর্তীতে ঐ এমপি পুত্রের মাধ্যমেই সাহাবউদ্দিন অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসায় জড়িয়ে যান। বর্তমানে টেলিটকে সাহাবউদ্দিনের দূর্নীতির বলয়ের অন্যতম সদস্য বিএনপি নেতা মেজর হাফিজের আপন মেয়ে জামাই ও টেলিটকের কোম্পানী সেক্রেটারী তাগরিকুল ইসলাম, জেনারেল ম্যানেজার নুরুল মাবুদ, জেনারেল ম্যানেজার আনােয়ার হােসেন, জেনারেল ম্যানেজার প্রভাস চন্দ্র ও ক্রয় বিভাগের ম্যানেজার রফিক।

এছাড়াও আরো বেশ কিছু বিষয়ে নুরুল জিহৃদ সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দেন। শুধু নুরুল জাহিদ নয়, বরং. বিটিআরসি’র পরিদর্শকদলের পরিদর্শনেও টেলিটকের ভিওআইপি সংশ্লিষ্টতার কথা উঠে এসেছে।

বিটিআরসি’র পরিদর্শকদল তাদের দাখিলকৃত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, গত ৩ ফেব্রুয়ারি অবৈধ ভিওআইপি অভিযানে টেলিটকের জব্দকৃত ৩,৪০০ টি সিমের রেজিষ্ট্রেশনকৃত এনআইডি-এর মধ্যে কতিপয় এনআইডি (র‌্যামডামভাবে সিলেকশন) পর্যবেক্ষণে দেখা যায় যে, একটি এনআইডি’র বিপরীতে একাধিক মোবাইল স্টেশন ইন্টারন্যাশনাল সাবস্ক্রাইবার ডিরেক্টরি নম্বর (এমএসআইএসডিএন) বায়োমেট্রিক রেজিস্ট্রেশন/এ্যাক্টিভেশন করা হয়েছে। তন্মধ্যে ২৪ ঘন্টার ভিতরে একই ডিস্ট্রিবিউটর ও রিটেইলার-এর মাধ্যমে বেশ কিছুসংখ্যক নম্বর বায়োমেট্রিক রেজিস্ট্রেশন/এ্যাক্টিভেশন করা হয়েছে। এতদসংক্রান্তে একটি এনআইডি’র বিপরীতে একই/সংশ্লিষ্ট অপারেটরের ১৪ টি পর্যন্ত সিম এ্যাক্টিভেশন পাওয়া যায়। সিমসমূহ পর্যবেক্ষণে দেখা যায় যে, একটি নম্বর বাদে অন্য ১৩টি একই সিরিজের নম্বর যা একজন/একটি রিটেইলার কর্তৃক বায়োমেট্রিক রেজিস্ট্রেশন/এ্যাক্টিভেশন করা হয়েছে। এক্ষেত্রে, গভীর রাতেও (রাত ০৩:১৮ মিনিট) সিম এ্যাক্টিভেশন-এর প্রমান পাওয়া যায়। এতদসংক্রান্তে অবৈধ পন্থায় ব্যবহৃত সিমসমূহ একই ব্যক্তির অনুকূলে একই রিটেইলার এর মাধ্যমে বিক্রয় এবং আইএমইআই-এর অনুকূলে একাধিক নম্বর বরাদ্ধ করার অর্থাৎ বায়োমেট্রিক রেজিস্ট্রেশন/এ্যাক্টিভেশন-এ টেলিটক এর সেলস ও ডিস্ট্রিবিউশন এন্ড সিআরএম ডিভিশন এবং সিস্টেম অপারেশন ডিভিশন-এর সহয়তায় রিটেইলারগণ কোন ধরনের যাচাই বাছাই ব্যতীত বিপুল পরিমান সীম বিপণন করে আসছে মর্মে প্রতীয়মান হয়।

সিআরএম হতে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায় যে, ১৫৭৫৪১৭৪১৭ নামক এমএসআইএসডিএন-টি নেটওয়ার্কে ০২-০৫-২০২০ তারিখে চালু হয়ে ০৪-০২-২০২১ তারিখে সাস্পেন্ড করা হয় অর্থাৎ ০৩-০২-২০২১ তারিখে অবৈধ ভিওআইপি স্থাপনা সনাক্তের পরের দিন। যদিও উক্ত সীম বন্ধের কোন নির্দেশনা বিটিআরসি হতে টেলিটক-কে প্রদান করা হয়নি। তদুপরী টেলিটক হতে নম্বর সাস্পেন্ড (ডি-এ্যাক্টিভ) করার বিষয়টি টেলিটকের আভ্যন্তরীণ কর্মকর্তাবৃন্দ জড়িত থাকতে পারে মর্মে প্রতীয়মান হয়।
গত ০৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ তারিখে অবৈধ ভিওআইপি অভিযানে টেলিটকের জব্দকৃত ৩,৪০০ (তিন হাজার চারশত)টি সীম ডি-এ্যাক্টিভেট করার জন্য বিটিআরসি অথবা কোন আইন-প্রয়োগকারী সংস্থা হতে কোন ধরনের নির্দেশনা প্রদান না করা সত্ত্বেও টেলিটক স্বপ্রণোদিত হয়ে সীম সমূহ তাদের নেটওয়ার্কে ডি-এ্যাক্টিভেট করেছে , যাতে করে তাদের অবৈধ ভিওআইপি কাজে ব্যবহৃত সীমসমূহ চালু অবস্থায় অসাধু ব্যবসায়ীদের সর্বোচ্চ সুবিধা প্রদান এবং অভিযান চলার পর পরই দ্রুত বন্ধ অর্থাৎ নেটওয়ার্কের তথ্য গোপন করায় সহায়তা প্রদানের বিষয়টি সুস্পষ্ট হয়।

এ বিষয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, শুধু টেলিটক নয়, অন্যদের সিমও কমবেশি ভিওআইপির চোরাকারবারে ব্যবহার করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানকে অভিযুক্ত করা যাবে না। প্রতিষ্ঠানের কিছু অসাধু কর্মকর্তা মিলে একটি অপরাধচক্র এ ক্ষেত্রে কাজ করছে। আর বিটিআরসির কাছেও এখনো ভিওআইপি পুরোপুরিভাবে মনিটরিং করার টেকনোলজি নেই। তাদের অভিযানে পাওয়া তথ্যে এ অপরাধের সার্বিক চিত্র উঠে আসছে না।

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাহাব উদ্দিন সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘টেকনিক্যাল কারণে টেলিপে অ্যাপসটি বন্ধ রাখা হয়েছে। শিগগিরই এটি আবার চালু করা হবে।’ দুর্নীতির কারণে ওএসডি থাকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমাকে সাত মাসের জন্য ওএসডি করা হয়েছিল। তবে এটাকে ঠিক ওএসডি বলা যায় না, আমাকে এমডি অফিসে সংযুক্তি দেওয়া হয়েছিল।