নেতিবাচক রাজনীতির কারণেই সবাই বিএনপি ছেড়ে চলে যাচ্ছেন
‘নেতিবাচক রাজনীতির কারণেই সবাই বিএনপি ছেড়ে চলে যাচ্ছেন’, বলেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। শুক্রবার (৮ নভেম্বর) রাজধানীর ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইডিইবি) মিলনায়তনে প্রতিষ্ঠানটির ৪৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও গণপ্রকৌশল দিবসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সসমসাময়িক রাজনীতি প্রসঙ্গে তিনি এসকল কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা শুনেছেন বিএনপি থেকে সবাই চলে যাচ্ছে। মোর্শেদ খান ও মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান পদত্যাগ করেছেন। আরও অনেকে পদত্যাগ করবেন বলে নাম শোনা যাচ্ছে। এর কারণ নেতিবাচক এবং জ্বালাও-পোড়াও রাজনীতি। আর দূর থেকে স্কাইপির মাধ্যমে রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করার ফল হচ্ছে গণহারে দল ত্যাগ। মোর্শেদ খান (বিএনপির দু’বারের মন্ত্রী) নিজেই বলেছেন বিএনপি এখন জাতীয়তাবাদী স্কাইপি দলে রূপান্তরিত হয়েছে। এটা আমার বক্তব্য নয়। তাদের নেতিবাচক রাজনীতির কারণেই তাদের নেতারা দল ছেড়ে চলে যাচ্ছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা শক্তিশালী বিরোধীদল চাই। আমরা চাই বিএনপি একটি শক্তিশালী বিরোধীদল হিসেবে সংসদে এবং সংসদের বাইরে থাকুক। কিন্তু যেভাবে তাদের নেতারা দল ত্যাগ করছেন, এতে মনে হচ্ছে আমরা চাইলেও তারা শক্তি ধরে রাখতে পারছেন না। ক্রমাগত শক্তি ক্ষয় হয়ে যাচ্ছে।’
এসময় সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার পাশাপাশি ভালো কাজের প্রশংসাও হওয়া উচিত বলেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। ‘আমরা চাই, আমাদের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো আমাদের সমালোচনা করুক, বিএনপি একটি শক্তিশালী বিরোধীদল হিসেবে সংসদে এবং সংসদের বাইরে থাক’, বলেন তিনি।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, পৃথিবীর কোনো দেশের সরকার অতীতেও শতভাগ নির্ভুল কাজ করতে পারেনি এবং ভবিষ্যতেও পারবে না। তাই ভুল হলে অবশ্যই সমালোচনা হবে। কিন্তু যেসব ভালো কাজ হচ্ছে সেগুলোরও প্রশংসা হওয়া প্রয়োজন। সেটি না হলে দেশ এগিয়ে যাবে না।
তিনি বলেন, আমরা সমালোচনাকে সমাদৃত করতে চাই, সমালোচনাকে সমাদৃত করার চর্চাকে লালন করি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সমালোচনাকে সমাদৃত করার চর্চাকে লালন করেন।
এদিকে শিক্ষাব্যবস্থার মাধ্যমে বিপুল জনসম্পদের দক্ষতাবৃদ্ধিতে কারিগরি শিক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আমি মনে করি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বাড়ানোর চেয়ে কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বাড়ানো বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ডিগ্রিতে ইন্টার্নশিপে কারিগরি শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করতে হবে। যাতে পাস করে দক্ষ হয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে পারে। তাহলে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার যে লক্ষ্য নিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাজ করছেন, সেটি পূরণে সক্ষম হবো। প্রকৃত দেশ গড়তে হলে কারিগরি শিক্ষার বিকল্প নাই। এখন উচ্চ মাধ্যমিক পাসের যোগ্যতার চাকরির জন্য গ্রাজুয়েটরা আবেদন করেন।
উল্লেখ্য, আইডিইবি’র উদ্যোগে ‘লার্নিং বাই ডুয়িং হোক শিক্ষার ভিত্তি’- এই স্লোগানে ঢাকাসহ সারাদেশে উদযাপন করা হচ্ছে গণপ্রকৌশল দিবস-২০১৯।
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ আরও বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রায় দেড় কোটি বাংলাদেশি মানুষ কাজ করছে। বাংলাদেশ একটি জনশক্তি রপ্তানিকারক দেশ। সেখানে আমাদের দেশে দু’টি শ্রেণিতে কয়েক লাখ বিদেশি কাজ করছে। একটি হলো শীর্ষ নির্বাহীতে, আরেকটি হলো দক্ষ জনশক্তিতে। এটি তো হওয়ার কথা ছিল না। কারণ আমাদের দেশের যেসব খাতে বিদেশিরা কাজ করছে, সেসব খাতে দক্ষ জনশক্তির অভাব রয়েছে।
বিশেষ অতিথি শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, শিল্পায়নের জন্য দক্ষ মানবশক্তির যোগান দিতে কারিগরি শিক্ষার বিকল্প নাই। দক্ষ জনশক্তি তৈরি করার জন্য বঙ্গবন্ধু আমাদের যে দিক নির্দেশনা দিয়েছিলেন, সেই দিক নির্দেশনা তারই কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছি। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় মানবসম্পদ উন্নয়নে প্রায়োগিক শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার।
সকালে পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে গণপ্রকৌশল দিবস এবং আইডিইবির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন তথ্যমন্ত্রী ও শিক্ষা উপমন্ত্রী। পরে আইডিইবি থেকে র্যালি বের হয়ে প্রেসক্লাবের অভিমুখে যাত্রা করে