ঢাকা শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল ২০২৪, ৭ই বৈশাখ ১৪৩১


ভৈরবে গৃহকর্মীকে অমানুষিক নির্যাতন, স্বামী-স্ত্রী আটক


১১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ২৩:৫৩

ছবি সংগৃহিত

জয়নাল আবেদীন রিটন, ভৈরব প্রতিনিধি: কিশোরগঞ্জের ভৈরব বাজারের বাতাশাপট্টি এলাকার একটি বাসায় আসবাবাপত্র পরিস্কার করতে গিয়ে অসতর্কাবস্থায় একটি কাচেঁর চুরি ভেঙ্গে ফেলায় সাদিয়া নামের আঠারো বছরের এক গৃহকর্মীকে নির্যাতন করেছে বাসার গৃহকর্তা ও গৃহকর্ত্রী। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তানভীর রাফসান সাদলি ও মেহেরুন্নেসা অপি দম্পত্তির হাতে নিষ্ঠুর নির্যাতনের শিকার হয় সাদিয়া। মুমুর্ষ অবস্থায় নির্যাতিতা সাদিয়া ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এঘটনায় অভিযুক্ত স্বামী-স্ত্রীকে আটক করেছে পুলিশ। সাদিয়া ময়মনসিংহের তারাকান্দা থানার কাকনি গ্রামে পিতামাতাহীন । জন্মের পর পরই সাদিয়ার পিতামাতা মারা যায়। সে থেকে সাতিদয়ার এক দুরসম্পর্কের খঅলার কাছেই বড় হতে থাকে সাদিয়া।

নির্যাতিতা গৃহকর্মী সাদিয়া জানান, ঘটনার দিন বাসার ওয়্যারড্রপ পরিষ্কার করার সময় অসতর্কতাবশত তার হাতের ধাক্কা লেগে চুরি রাখার একটি আলনা মেঝেতে পড়ে যায়। এতে একটি কাচেঁর চুরি ভেঙ্গে যাওয়ায় তার উপর চড়াও হন গৃহকর্তী মেহেরুন্নেসা অপি। প্রথমে লাঠি দিয়ে তাকে বেধরক পিটিয়ে আহত করে ছুরি দিয়ে আঘাত করে চোখের উপড়ে গুরুতর জখম করা হয়। এতেই খান্ত হননি নিষ্ঠুর গৃহকর্ত্রী অপি বেগম। লাঠিপেটা করে ক্লান্ত হয়ে যায়। এতেও খান্ত হননি ওই নিষ্টুর গৃহকর্ত্রী । পরে গরম পানি এনে গৃহকর্মী সাদিয়ার শরীরে ঢেলে দেন তিনি। কিছুক্ষণ পর গৃহকর্তা তানভীর রাফসান সাদলি ঘটনা শুনে তিনিও বাসায় আসেন। এসে তিনিও স্ত্রীকে সাথে নিয়ে অসহায় গৃহকর্মী সাদিয়াকে বেধরক লাঠিপেটা করেন। এসময় নিজের আত্মরক্ষার্থে কোনো রকমে বাসা থেকে পালিয়ে রাস্তার কয়েকজনের সহযোগিতায় হাসপাতালে আসে গৃহকর্মী সাদিয়া।


পরবর্তীতে এগারো বছর বয়সে সাদিয়াকে ভৈরবে সাদলি-অপি দম্পতির বাসায় কাজের মেয়ে হিসেবে নিয়ে আসে তার খালা রেহেনা বেগম। প্রথমদিকে সাদিয়ার প্রতি ওই দম্পতির স্বাভাবিক মনোভাব থাকলেও বছর দুয়েক যাওয়ার পর থেকেই তুচ্ছ ঘটনাতেই সাদিয়ার উপর নেমে আসে নির্মম নির্যাতন। প্রায়ই তাকে কারণে-অকারণে লাঠিপেটাসহ গরম পানির ছেকা দেওয়ার মতো বর্বর নির্যাতন করা হতো। এমনকি বাসার সবাই কোথাও বেড়াতে গেলেও সাদিয়াকে তালাবদ্ধ করে রেখে যাওয়া হতো। এঘটনায় অভিযুক্তদের দৃষ্ট্রান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন সাদিয়ার দুঃসম্পর্কের একমাত্র স্বজনও।