ঢাকা শুক্রবার, ২৯শে মার্চ ২০২৪, ১৬ই চৈত্র ১৪৩০


ট্রাম্পের প্রচারণা শিবিরে ইরানের সাইবার হামলা


৫ অক্টোবর ২০১৯ ২১:২৬

টানা দুই মেয়াদে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হতে মরিয়া ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইতিমধ্যেই তার হয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছে কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। এবার এসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান লক্ষ্য করে সাইবার হামলার অভিযোগ উঠেছে ইরানের বিরুদ্ধে।

৪ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বহুজাতিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফটের পক্ষ থেকে এক ব্লগ পোস্টে বলা হয়েছে, ইরান সরকারের সমর্থনেই এ সাইবার হামলা করা হয়েছে। দেশটির হ্যাকাররা যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান ও সাবেক সরকারি কর্মকর্তা, রাজনৈতিক প্রচারণা কাভার করা সাংবাদিক ও প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ইমেইল অ্যাকাউন্ট চিহ্নিত করতে ২ হাজার ৭০০ বারেরও বেশি চেষ্টা চালিয়েছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম রয়টার্স জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণা শিবিরকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে এ সাইবার হামলা চালানো হয়েছে।

মাইক্রোসফট জানিয়েছে, দুই শতাধিক ইমেইল অ্যাকাউন্টে সাইবার হামলা চালিয়েছে হ্যাকার গ্রুপটি। এরমধ্যে কিছু অ্যাকাউন্ট যুক্তরাষ্ট্রের একজন সম্ভাব্য প্রার্থীর প্রেসিডেনশিয়াল ক্যাম্পেইন সংশ্লিষ্ট। আর রয়টার্স জানিয়েছে, ট্রাম্পের পুনঃনির্বাচনের প্রচারণা কার্যক্রমই ছিল তেহরানের এ সাইবার হামলার লক্ষ্যবস্তু।

ইরানের পক্ষ থেকে অবশ্য এ ব্যাপারে কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে ট্রাম্পের প্রচারণা শিবিরের একজন মুখপাত্র জানিয়েছে, তাদের কাছে সাইবার হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হওয়ার মতো কোনও ইঙ্গিত পরিলক্ষিত হয়নি।

প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফটের ব্লগে বলা হয়েছে, সম্প্রতি একটি থ্রেট গ্রুপ যাদের আমরা ফসফরাস নামে ডেকে থাকি; তাদের কিছু সাইবার কার্যক্রম আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। আমাদের বিশ্বাস তারা ইরানি এবং ইরান সরকারের সঙ্গে তাদের যোগসাজশ রয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, গত আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে লোকজনের ইমেইল অ্যাকাউন্ট শনাক্তের জন্য দুই হাজার ৭০০ বারেরও বেশি দফায় চেষ্টা চালিয়েছে ফসফরাস। পরবর্তীতে তারা ২৪১টি অ্যাকাউন্টে সাইবার হামলা চালায়।

২০১৫ সালের জুনে ভিয়েনায় ইরানের সঙ্গে নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ সদস্য দেশ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, রাশিয়া, চীন (পি-ফাইভ) ও জার্মানি (ওয়ান) পরমাণু চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। চুক্তি অনুযায়ী, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম চালিয়ে গেলেও পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি না করার প্রতিশ্রুতি দেয় তেহরান। ওবামা আমলে স্বাক্ষরিত এই চুক্তিকে ‘ক্ষয়িষ্ণু ও পচনশীল’ আখ্যা দিয়ে ২০১৮ সালের মে মাসে তা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর নভেম্বরে থেকে তেহরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল শুরু করে ওয়াশিংটন। এমন বাস্তবতায় ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে ইরানের সম্পর্কে অস্থিরতা দেখা দেয়।

ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি গত ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৪তম বার্ষিক অধিবেশনে ভাষণ দেন। সেখান থেকে তেহরানে ফিরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ইরানের ওপর যতোক্ষণ সর্বোচ্চ চাপ ও নিষেধাজ্ঞা আরোপিত থাকবে ততোক্ষণ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সংলাপে বসবে না তেহরান।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের বার্ষিক অধিবেশনের অবকাশে বিশ্বের বহু শীর্ষ নেতার সঙ্গে সাক্ষাতের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি এমন কোনও রাষ্ট্রপ্রধান পাইনি যিনি পরমাণু সমঝোতা থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে যাওয়া ও তেহরানের ওপর একতরফা নিষেধাজ্ঞা আরোপের নিন্দা জানাননি।’ এমন পরিস্থিতিতেই ট্রাম্পের নির্বাচনি প্রচারণা শিবিরে ইরানের সাইবার হামলার খবর এলো।

নতুন সময়/এনকে