ঢাকা শুক্রবার, ২৯শে মার্চ ২০২৪, ১৫ই চৈত্র ১৪৩০


গোমর ফাঁস করলো কিম, ফেঁসে গেলেন মিলা


৯ জুলাই ২০১৯ ০২:০৫

জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী মিলার নির্দেশেই তার সাবেক স্বামী পারভেজ সানজারীর শরীরে অ্যাসিড নিক্ষেপ করেছিলেন বলে স্বীকার করেছেন মিলার ব্যক্তিগত দেহরক্ষী কিম জন পিটার হালদার। মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে মিলার জড়িত থাকার সমস্ত ঘটনার বর্ণনাও দিয়েছেন তিনি।

ডিবিকে দেওয়া স্বীকারোক্তিতে কিম বলেছে, মিলা আপুর মিউজিক রোবোট ব্যান্ডের দলে দীর্ঘ ৫ বছর যাবৎ মালামাল বহন করতাম। এর পর ৩ বছর ধরে মিলা আপুর ব্যক্তিগত দেহরক্ষী হিসেবে সঙ্গে আছি। গত ২৫ মে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে মিলা আপু কান্না করে বলে, সানজারী আমার জীবনটা নষ্ট করেছে। সানজারীকে তুইতো কিছু করতে পারবি না। যা করার আমি নিজেই করব। তখন আমি মিলা আপুকে বলি আপনাকে কিছু করতে হবে না, যা করার আমিই করব। এ সময় মিলা আপুর সাথে পরামর্শ করি সানজারীর গোপনাঙ্গে অ্যাসিড দেব। আপু বলে পারলে কিছু করে দেখা তারপর আসিস। তখন আমি চিন্তা করি মিলা আপুর জীবন নষ্ট করেছে সানজারীর জীবনও নষ্ট করব।

ওই দিনই (২৫ মে) সন্ধ্যাবেলায় মিরপুর ডিওএইচএস সরকার মার্কেটে হার্ডওয়্যারের দোকান থেকে অ্যাসিড কিনে এনে একটি কাচের কৌটাতে ঢেলে ব্যাগের মধ্যে রাখি। ২৬ ও ২৭ মে দুই দিন উত্তরায় সানজারীর বাড়ির সামনে ইফতারের পর থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত অবস্থান করি। কিন্তু সানজারীকে দেখি নাই। পরে ২ জুন বিকেলে সানজারীর বাসার সামনে যাই। আড়াল থেকে দেখতে থাকি ইফতারের পর আনুমানিক সাড়ে ৭টা থেকে ৭টা ৪৫মিনিটের দিকে সানজারী মোটরসাইকেল নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে ৫০ গজ সামনের দিকে যাওয়ার পর আমি ডাক দেই ভাইয়া দাঁড়ান। এরপর মোটরসাইকেলের সামনে দুই হাত লম্বা করে দাঁড়িয়ে গতি রোধ করি।

সানজারীকে বলি ভাইয়া আমি বিপদে আছি, আমার দুইটা কথা শোনেন। সানজারী বলে ‘তোর সাথে আমার কোন কথা নাই, তুই আমার সামনে থেকে চলে যা।’ এ সময় সানজারী মোটরসাইকেল ঘুড়িয়ে বাসার দিকে যেতে থাকলে আমি পুনরায় মোটরসাইকেলের সামনে দাঁড়িয়ে দ্রুত অ্যাসিডের কৌটা বের করে তার গায়ে ঢেলে দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যাই। এ ঘটনার পর এয়ারপোর্ট রেলস্টেশনে যাওয়ার পর মিলা আপুকে ফোন করে বলি আপু সানজারীর গায়ে অ্যাসিড দিয়েছি।

আপু বলে ‘ঠিক আছে, ভালো কাজ করেছিস, এখন পালাইয়া যা। পরে আপু আমাকে পূর্ব পরিচিত ব্যান্ডের রহিমের সাথে যোগাযোগ করে। রহিম আমাকে ক্যান্টনমেন্টের ভেতর আপুর বন্ধু টুকুন খানের বাসায় রেখে দেয়। পরে মিলা আপু আমার কাছে এসে দেখা করে সান্ত্বনা দেয় এবং বলে তোর জামিনের ব্যবস্থা করতেছি।

মিলা আপু আমাকে শিখিয়ে দিয়ে বলে, ‘তোর সঙ্গে আমি মোবাইল এ কথা বলি, এই অ্যাসিড মারার কথায় আমার নাম বলবি না। তুই বলবি আমি নিজের ইচ্ছাতেই এই কাজ করেছি।’

প্রসঙ্গত, গত ২ জুন সন্ধ্যায় মোটরসাইকেলযোগে যাওয়ার সময় বাসার সামনের সড়কে অ্যাসিড হামলার শিকার হন মিলার সাবেক স্বামী সানজারী। এরপরের দিন অর্থাৎ ৩ জুলাই ক্যান্টনমেন্টের ভেতর মিলার বন্ধু টুকুন খানের বাসা থেকে কিমকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। ৪ জুন অ্যাসিড দমন আইনে গায়িকা মিলার বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা দায়ের করেন পারভেজ সানজারীর বাবা এস এম নাসির উদ্দিন। সেই মামলার এজাহারে মিলা এবং তার সহকারী পিটার কিমকে অভিযুক্ত করা হয়।


নতুনসময়/এমএন