ঢাকা শুক্রবার, ২৯শে মার্চ ২০২৪, ১৫ই চৈত্র ১৪৩০


প্রয়াত নাট্যাচার্য সেলিম আল দীন ইস্যুতে দ্বন্দে অভিনয় শিল্পীরা!


১৭ জানুয়ারী ২০১৯ ০৫:৫০

প্রখ্যাত নাট্যকার ও গবেষক সেলিম আল দীনের ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী ছিল ১৪ জানুয়ারি। ২০০৮ সালের ১৪ জানুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন।

সেলিম আল দীন ছিলেন সর্বজন সমাদৃত একজন মানুষ তাই মঞ্চে যারা কাজ করেন তাদের অনেকের কাছেই তিনি ছিলেন পথিকৃত। বলা হয় রবীন্দ্রত্তোর বাংলা নাটকের প্রবাদ পুরুষ তিনি।

এই গুণীর ১১তম মৃত্যবার্ষিকীতে মঞ্চ ও টিভি অভিনেতা শহীদ আলমগীর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেলিম আল দীনের মৃত্যুবার্ষিকীর শ্রদ্ধা জানালে সেখানে অশালীন ভাষায় মন্তব্য করেন আরেক প্রবীণ অভিনেতা জিয়াউল হাসান কিসলু।

ফেসবুকে প্রকাশিত সেই আলাপচারিতার স্ক্রিনশটে দেখা যায় প্রবীণ অভিনেতা জিয়াউল হাসান কিসলু অভিনেতা শহীদ আলমগীরের শ্রদ্ধাবার্তার নিচে লিখেছেন “কুকুরের কাজ কুকুর করেছে, কামড় দিয়েছে পায়ে... তাই বলে কি কুকুরকে ‘কামড়ানো’ মানুষের শোভা পায়?

জিয়াউল হাসান কিসলুর এমন মন্তব্যে নাট্যাঙ্গনের অনেকের মাঝেই এ নিয়ে চলছে আলোচনা সমালোচনা। অনেককে আবার এর প্রতিবাদ করতেও দেখা গেছে ফেসবুকে।

লেখক ও পরিচালক দিপান্ত সরকার এক মন্তব্যে লিখেছেন, ‘ইতোপূর্বে আমরা দেখেছি, গুণী অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচী’র সেটে বিলম্বে আসায় তরুণ অভিনেত্রী প্রসূন আজাদকে কঠিন শাস্তি পেতে হয়েছিলো। পুরো একটি বছর টেলিভিশন নাটকে বয়কট হওয়াটা একজন টিভি অভিনেত্রীর জন্য কঠিন শাস্তি বৈকি! শ্রদ্ধেয় রোকেয়া প্রাচীর চাইতে ড. সেলিম আল দীন শতগুণ বেশি শ্রদ্ধার পাত্র। প্রসূন আজাদের অপরাধের চাইতে জিয়াউল হাসান কিসলুর অপরাধও অজস্রগুণ বেশী। সেই হিসাবে জিয়াউল হাসান কিসলুকে আজীবনের জন্য টিভি ও মঞ্চে নিষিদ্ধ করা উচিত। এখন গ্রাম থিয়েটার, গ্রুপ থিয়েটার এবং টেলিভিশন ভিত্তিক পেশাজীবী সংগঠনগুলো জিয়াউল হাসান কিসলুর ব্যাপারে কী সিদ্ধান্ত নেয় সেটা দেখার অপেক্ষায় আছি'।

এহসানুর রহমানকে উদ্দেশ্য করে জিয়াউল হাসান কিসলুর মন্তব্য

নির্মাতা, অভিনেতা ও মঞ্চকর্মী এহসানুর রহমান মূলত এই বিষয়টিকে সামনে নিয়ে আসেন যে কারণে বর্তমানে তাকে আইসিটি এ্যক্টে মামলা ভীতি প্রদান করা হচ্ছে বলে আরও দু’টি স্ক্রীনশট এহসানুর রহমান প্রকাশ করেছেন ও তিনি লিখেছেন, ‘গত কাল অভিনয় শিল্পি সংঘের গোপন ভাইবার গ্রুপে নাট্যাচার্য সেলিম আল দীন'কে কটুক্তি সংক্রান্ত আমার একটি পোষ্ট দেয়া এবং পরবর্তীতে কটুক্তিকারী(নামটি সকলেই জানেন) এবং ঐ গ্রুপের সঞ্চালক'র(নামটি সকলেই জানেন) সাথে ইনবক্স ও মোবাইল ফোনে আলাপের প্রেক্ষিতে ইতিপূর্বে সৃষ্ট ক্ষোভের অবসান করার জন্য উক্ত পোষ্টে এসংক্রান্ত আমার বক্তব্য প্রদান করে ভুল বোঝাবুঝি'র অবসান ঘটাই।

কিন্তু কিছুক্ষণ আগেই জানতে পারলাম ঐ ঘটনার জন্য সৃষ্ট ভুল বোঝাবুঝির জন্য মন্তব্যকারী ও সঞ্চালক ক্ষমা প্রার্থনা(প্রমাণ সংরক্ষিত আছে) করার পরও আজ আবার ঐ গ্রুপেই উক্ত কটুক্তিকারী এবং সঞ্চালক এই ঘটনাকে উদ্ধৃত করে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য প্রযুক্তি আইন প্রয়োগের হুমকি প্রদান করেছেন!(স্ক্রীন শট সংযুক্ত)! এখন মনে হচ্ছে কটুক্তিকারী চাপে পরে ক্ষমা চাইলেও ঘটনাটি তাঁর অনিচ্ছাকৃত নয় বরং উদ্দেশ্য প্রণোদিত?????

এখন আমি জানতে চাই--কোনো গোপন গ্রুপে কি কোন সন্মানী ব্যাক্তির চরিত্র হনন করে মন্তব্য প্রদান করা কি তথ্য প্রযুক্তি আইনের লংঘন নয়??? নাকি সেটি প্রকাশ্যে আনা তথ্য প্রযুক্তি আইনের লংঘন???

তথ্য প্রযুক্তি আইন---কোনটি কে সমর্থন করে?

এ বিষয়ে জিয়াউল হাসান কিসলুর সাথে তার ব্যবহৃত মুঠোফোন নাম্বারে যোগাযোগ করা হলে প্রতিবেদনটি লেখা পর্যন্ত তিনি তার ফোনটি রিসিভ করেননি।

প্রসঙ্গত, শহীদ আলমগীরের শ্রদ্ধাবার্তায় মূলত অভিনয় শিল্পী সংঘের নিজস্ব ভাইবার চ্যাটিং গ্রুপে এই বাজে মন্তব্য করেন জিয়াউল হাসান কিসলু। বিষয়টি নিয়ে বর্তমানে বেশ আলোচনা চললেও অভিনয় শিল্পী সংঘ আনুষ্ঠানিকভাবে কোন বিবৃতি দেয়নি। এখন দেখবার বিষয় নাট্যাচার্য সেলিম আল দীনের এই ইস্যুতে কি ভূমিকা রাখে অভিনয় শিল্পীদের মূল সংগঠন অভিনয় শিল্পী সংঘ।