ঢাকা শুক্রবার, ২৯শে মার্চ ২০২৪, ১৬ই চৈত্র ১৪৩০


গলায় ফাঁস দিয়ে ইবি শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা


২০ অক্টোবর ২০১৮ ০৪:৫৪

নাজমুল হাসান

গলায় ফাঁস দিয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের এক শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে। ওই শিক্ষার্থীর নাম নাজমুল হাসান।

শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় সাদ্দাম হোসেন হলের ২২৯ নম্বর কক্ষে গলায় দড়ি দেয়। নাজমুল সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের বারাত গ্রামের আব্দুল মালেক গাজীর ছোট ছেলে।

জানা যায়, গলায় ফাঁস নেওয়ার আগে তার বন্ধু নাদিমকে মুঠোফোনে রুমে আসতে বলেন। এর আধা ঘন্টার মাথায় নাদিম রুমে এসে ফ্যান লাগানোর রডের সঙ্গে নাজমুলের দেহ ঝুলে থাকতে দেখে। তাতক্ষণিক দড়জা ভেঙ্গে তাকে উদ্ধর করে বিশ^বিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যায় তার সহপাঠিরা। পরে কর্তব্যরত ডাক্তার নাজমুলকে মৃত ঘোষণা করেন।

নাজমুলের ঘনিষ্ট বন্ধু ও বড় ভাইদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শুক্রবার বিকালে ক্যাম্পাসে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিয়ে সন্ধ্যা ৭টার দিকে রুমে ফিরেন তিনি। এরপরেই হতাশার কাছে হার মেনে নিজের জীবনকে বিসর্জন দেয় নাজমুল। ভবিষ্যতে পুলিশ অফিসার হওয়ার স্বপ্ন বুনছিলেন নাজমুল। স্বপ্ন পূরণে ২য় বর্ষ থেকেই বিসিএস প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন। বিভাগে ভাল অবস্থানে ছিলেন তিনি। কিন্তু অসুস্থতা ও বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা তাকে গ্রাস করতে থাকে দিনের পর দিন। বিভিন্ন সময় ঘনিষ্ট জনদের কাছে হতাশার কথা ব্যক্ত করতেন। সকলে তাকে বিভিন্ন পরামর্শ দিতেন। বন্ধুরাও সবসময় কাছে কাছে রাখতেন।

নাজমুল গলায় ফাঁস দেওয়ার দুই ঘন্টা আগে তার ফেসবুক আইডিতে ‘একটা রিক্সা চাই শৈশব ও কৈশোর ফিরে যাওয়ার জন্য’ লিখে স্টাটাস দেয়। তার সাজানো গোছানো পড়ার টেবিলের উপরে পরে থাকতে দেখায় যায় বিভিন্ন প্রকারের ঔষধ। তার পাশেই ছোট একটি কাগজে ঔষধ গ্রহণের সময় লিখে রাখা। এতে সকাল ও রাতে ৬টি করে ঔষধ গ্রহণের কথা উল্লেখ করা রয়েছে। পাশে পরে থাকা ডায়রিতে সর্বশেষ লেখা দেখতে পাওয়া যায়। সেখানে তার প্রিয়সীকে নিয়ে স্বপ্নের রাজ্যে ঘর সাজানোর কথা বলেছেন তিনি।

বিশ^বিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন, ‘তার অবিভাবককে খবর দেয়া হয়েছে। তারা আসলে তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রতন শেখ বলেন, ‘প্রাথমিক ভাবে ধারনা করা হচ্ছে আত্মহত্যা। লাস কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে পরিবারের কাছে লাস হস্তান্তর করা হবে।’