ঢাকা শনিবার, ২০শে এপ্রিল ২০২৪, ৭ই বৈশাখ ১৪৩১


পুরুষের চেয়ে নারীরা মানসিক স্বাস্থ্য ঝুঁকি বেশি


১১ অক্টোবর ২০১৮ ০৬:১০

বিশ্বে রোগীদের ১৩ শতাংশ মানসিক রোগাক্রান্ত। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বয়স্ক জনসংখ্যার ১৬.১ শতাংশ মানসিক সমস্যা রয়েছে। তবে ছেলেদের চেয়ে মানসিক দিক থেকে মেয়েরা বেশি আক্রান্ত। নারীরাই বেশি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মানসিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পরিচালক ড. আনওয়ারুল হাসান সূফী।

বুধবার (১০ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবসের সেমিনারে স্বাগত বক্তব্যে এসব কথা বলছিলেন তিনি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ বেশ কয়েকটি গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ৩৩ শতাংশ নারী হতাশায় ভূগছেন। এ ১১.৪ শতাংশ নারীর আত্বহত্যার প্রবণতাও রয়েছে। গর্ভবতী মায়েদের ক্ষেত্রে ছেলে সন্তান জন্মদেয়ার অক্ষমতা ডিপ্রেশনের একটি বড় কারণ। স্বামী ও শাশুড়ির অসহযোগীতা এর জন্য অনেকাংশে দায়ী।

এদিকে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস উৎযাপিত হয়েছে। এবারের দিবসের প্রতিপাদ্য ‘পরিবর্তনশীল বিশ্বে তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্য’। দিবসটি উপলক্ষে এদিন বেলা ১১টায় রাবির মনোবিজ্ঞান বিভাগ, বিশ্ববিদ্যালয় মানসিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও এডিটি ইন্টারন্যাশনাল এর সহযোগীতায় বিশ্ববিদ্যালয় দ্বিতীয় বিজ্ঞান ভবনের সামনে থেকে একটি শোভাযাত্রা বের হয়। পরে শোভাযাত্রাটি ক্যাম্পাসের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে শহীদ সুখরঞ্জন সমাদ্দার মিলনায়তনে গিয়ে শেষ হয় এবং সেখানে একটি সেমিনারের আয়োজন করা হয়। শোভাযাত্রাটি উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. আনন্দ কুমার সাহা। এতে অংশ নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের প্রায় তিন শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষাথী।

মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মুর্শিদা ফেরদৌস বিনতে হাবিব এর সঞ্চালনায় এসময় ড. সূফী আরও বলেন, শুধু দৈহিক সমস্য বা দৈহিক রোগমুক্ত থাকা মানে সুস্বাস্থ্য নয়, সামগ্রিক দৈহিক, মানসিক এবং সামাজিক সুস্থতাবোধ মিলেই হচ্ছে স্বাস্থ্যকর অবস্থা। মানসিক সমস্যাগ্রস্থদের নিয়ে সমগ্র বিশ্বে সচেতনতার অভাব আগেও ছিল এখনো আছে। দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মানসিক সমস্যার চাইতে শিক্ষকদের সমস্যাকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। কেননা শিক্ষকদের দুশ্চিন্তার প্রধান কারণ হল তাদের সন্তান নিয়ে। এছাড়াও শিক্ষকদের প্রতিবন্ধী সন্তানের জন্য ডে-সেন্টার চালু করা জরুরী বলে জানান তিনি।

দিবসটি উদযাপন কমিটির আহবায়ক ও মনোবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. এনামুল হকের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপ-উপাচার্য ড. চৌধূরী মো. জাকারিয়া বলেন, মানুষের সুস্থতার মূল হচ্ছে মানসিক সুস্থতা। দুশ্চিন্তার কারণে শিক্ষার্থীরা মাঝে মাঝে আত্বহত্যার পথ বেছে নেয়। এ দিবস উদযাপনের মাধ্যেমে শিক্ষক-শিক্ষাথীদের সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে এবং আত্বহত্যার হার কমে আসবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মনোবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তানজির আহম্মদ তুষার।

এসময় সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয় উপ-উপাচার্য ড. আনন্দ কুমার সাহা, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মনোরোগ বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. মামুন হোসাইন, এডিটি ইন্টারন্যাশনাল ট্রেইনি প্রোগাম অফিসার মুসতাক আহমেদ প্রমুখ।

এসএ